গগন
ঢাকা
ঘন
মেঘে
,
পবন
বহে
খর
বেগে
।
অশনি
ঝনঝন
ধ্বনিছে ঘন
ঘন
,
নদীতে
ঢেউ
উঠে
জেগে
।
পবন
বহে
খর
বেগে
।
তীরেতে
তরুরাজি দোলে
আকুল
মর্মর-রোলে ।
চিকুর
চিকিমিকে
চকিয়া
দিকে
দিকে
তিমির
চিরি
যায়
চলে
।
তীরেতে
তরুরাজি দোলে
।
ঝরিছে
বাদলের
ধারা
বিরাম-বিশ্রামহারা ।
বারেক
থেমে
আসে
,
দ্বিগুণ উচ্ছ্বাসে
আবার
পাগলের
পারা
ঝরিছে
বাদলের
ধারা
।
মেঘেতে
পথরেখা
লীন
,
প্রহর
তাই
গতিহীন
।
গগন-পানে চাই ,
জানিতে
নাহি
পাই
গেছে
কি
নাহি
গেছে
দিন
;
প্রহর
তাই
গতিহীন
।
তীরেতে বাঁধিয়াছি তরী ,
তীরেতে বাঁধিয়াছি তরী ,
রয়েছি
সারা
দিন
ধরি
।
এখনো
পথ
নাকি
অনেক
আছে
বাকি
,
আসিছে
ঘোর
বিভাবরী ।
তীরেতে
বাঁধিয়াছি তরী
।
বসিয়া
তরণীর
কোণে
একেলা
ভাবি
মনে
মনে
—
মেঝেতে
শেজ
পাতি
সে
আজি
জাগে
রাতি
,
নিদ্রা
নাহি
দুনয়নে
।
বসিয়া
ভাবি
মনে
মনে
।
মেঘের
ডাক
শুনে
কাঁপে
,
হৃদয়
দুই
হাতে
চাপে
।
আকাশ-পানে চায় ,
ভরসা
নাহি
পায়
,
তরাসে
সারা
নিশি
যাপে
,
মেঘের
ডাক
শুনে
কাঁপে
।
কভু
বা
বায়ুবেগভরে
দুয়ার
ঝনঝনি
পড়ে
।
প্রদীপ
নিবে
আসে
,
ছায়াটি
কাঁপে
ত্রাসে
,
নয়নে
আঁখিজল
ঝরে
,
বক্ষ
কাঁপে
থরথরে
।
চকিত
আঁখি
দুটি
তার
মনে
আসিছে
বার
বার
।
বাহিরে মহা ঝড় ,
বাহিরে মহা ঝড় ,
বজ্র
কড়মড়
,
আকাশ
করে
হাহাকার ।
মনে
পড়িছে
আঁখি
তার
।
গগন
ঢাকা
ঘন
মেঘে
,
পবন
বহে
খর
বেগে
।
অশনি
ঝনঝন
ধ্বনিছে ঘন
ঘন
,
নদীতে
ঢেউ
উঠে
জেগে
।
পবন
বহে
আজি
বেগে
।
দুর্বোধ
তুমি
মোরে
পার
না
বুঝিতে
?
প্রশান্ত বিষাদভরে
দুটি
আঁখি
প্রশ্ন
ক’রে
অর্থ
মোর
চাহিছে
খুঁজিতে ,
চন্দ্রমা যেমন
ভাবে
স্থিরনতমুখে
চেয়ে
দেখে
সমুদ্রের বুকে
।
কিছু
আমি
করি
নি
গোপন
।
যাহা
আছে
সব
আছে
তোমার
আঁখির
কাছে
প্রসারিত অবারিত
মন
।
দিয়েছি
সমস্ত
মোর
করিতে
ধারণা
,
তাই
মোরে
বুঝিতে
পার
না
?
এ
যদি
হইত
শুধু
মণি
,
শত
খণ্ড
করি
তারে
সযত্নে
বিবিধাকারে
একটি
একটি
করি
গণি
একখানি
সূত্রে
গাঁথি
একখানি
হার
পরাতেম
গলায়
তোমার
।
এ
যদি
হইত
শুধু
ফুল
,
সুগোল
সুন্দর
ছোটো
,
উষালোকে ফোটো-ফোটো ,
বসন্তের পবনে
দোদুল
,
বৃন্ত
হতে
সযতনে
আনিতাম
তুলে
—
পরায়ে
দিতেম
কালো
চুলে
।
এ যে সখী , সমস্ত হৃদয় ।
এ যে সখী , সমস্ত হৃদয় ।
কোথা
জল
, কোথা
কূল
,
দিক
হয়ে
যায়
ভুল
,
অন্তহীন রহস্যনিলয় ।
এ
রাজ্যের আদি
অন্ত
নাহি
জান
রানী
—
এ
তবু
তোমার
রাজধানী ।
কী
তোমারে
চাহি
বুঝাইতে ?
গভীর
হৃদয়-মাঝে
নাহি
জানি
কী
যে
বাজে
নিশিদিন নীরব
সংগীতে
—
শব্দহীন স্তব্ধতায় ব্যাপিয়া গগন
রজনীর
ধ্বনির
মতন
।
এ
যদি
হইত
শুধু
সুখ
,
কেবল
একটি
হাসি
অধরের
প্রান্তে আসি
আনন্দ
করিত
জাগরূক
।
মুহূর্তে বুঝিয়া
নিতে
হৃদয়বারতা ,
বলিতে
হত
না
কোনো
কথা
।
এ
যদি
হইত
শুধু
দুখ
,
দুটি
বিন্দু
অশ্রুজল
দুই
চক্ষে
ছলছল
,
বিষণ্ন
অধর
, ম্লান
মুখ
,
প্রত্যক্ষ দেখিতে
পেতে
অন্তরের ব্যথা
,
নীরবে
প্রকাশ
হত
কথা
।
এ
যে
সখী
, হৃদয়ের
প্রেম
,
সুখদুঃখবেদনার
সুখদুঃখবেদনার
আদি
অন্ত
নাহি
যার
—
চিরদৈন্য চিরপূর্ণ হেম
।
নব
নব
ব্যাকুলতা জাগে
দিবারাতে ,
তাই
আমি
না
পারি
বুঝাতে
।
নাই
বা
বুঝিলে
তুমি
মোরে!
চিরকাল
চোখে
চোখে
নূতন
নূতনালোকে
পাঠ
করো
রাত্রি
দিন
ধরে
।
বুঝা
যায়
আধো
প্রেম
, আধখানা
মন
—
সমস্ত কে বুঝেছে কখন ?
No comments:
Post a Comment