খ্যাপা
খুঁজে
খুঁজে
ফিরে
পরশপাথর ।
মাথায়
বৃহৎ
জটা
ধুলায়
কাদায়
কটা
,
মলিন
ছায়ার
মতো
ক্ষীণ
কলেবর
।
ওষ্ঠে
অধরেতে
চাপি
অন্তরের দ্বার
ঝাঁপি
রাত্রিদিন তীব্র
জ্বালা
জ্বেলে
রাখে
চোখে
।
দুটো
নেত্র
সদা
যেন
নিশার
খদ্যোত-হেন
উড়ে
উড়ে
খোঁজে
কারে
নিজের
আলোকে
।
নাহি
যার
চালচুলা গায়ে
মাখে
ছাইধুলা
কটিতে
জড়ানো
শুধু
ধূসর
কৌপীন
,
ডেকে
কথা
কয়
তারে
কেহ
নাই
এ
সংসারে
পথের
ভিখারি
হতে
আরো
দীনহীন
,
তার
এত
অভিমান
, সোনারুপা তুচ্ছজ্ঞান ,
রাজসম্পদের লাগি
নহে
সে
কাতর
,
দশা
দেখে
হাসি
পায়
আর
কিছু
নাহি
চায়
একেবারে পেতে
চায়
পরশপাথর!
সম্মুখে গরজে
সিন্ধু
অগাধ
অপার
।
তরঙ্গে
তরঙ্গ
উঠি
হেসে
হল
কুটিকুটি
সৃষ্টিছাড়া পাগলের
দেখিয়া
ব্যাপার ।
আকাশ
রয়েছে
চাহি
, নয়নে
নিমেষ
নাহি
,
হু
হু
করে
সমীরণ
ছুটেছে
অবাধ
।
সূর্য
ওঠে
প্রাতঃকালে পূর্ব
গগনের
ভালে
,
সন্ধ্যাবেলা ধীরে
ধীরে
উঠে
আসে
চাঁদ
।
জলরাশি
অবিরল
করিতেছে কলকল
,
অতল
রহস্য
যেন
চাহে
বলিবারে ।
কাম্য
ধন
আছে
কোথা
জানে
যেন
সব
কথা
,
সে-ভাষা যে বোঝে
সেই
খুঁজে
নিতে
পারে
।
কিছুতে
ভ্রূক্ষেপ নাহি
, মহা
গাথা
গান
গাহি
সমুদ্র
আপনি
শুনে
আপনার
স্বর
।
কেহ যায় , কেহ আসে , কেহ কাঁদে , কেহ হাসে ,
কেহ যায় , কেহ আসে , কেহ কাঁদে , কেহ হাসে ,
খ্যাপা
তীরে
খুঁজে
ফিরে
পরশপাথর ।
একদিন
, বহুপূর্বে , আছে
ইতিহাস
—
নিকষে
সোনার
রেখা
সবে
যেন
দিল
দেখা
—
আকাশে
প্রথম
সৃষ্টি
পাইল
প্রকাশ
।
মিলি
যত
সুরাসুর কৌতূহলে ভরপুর
এসেছিল
পা
টিপিয়া
এই
সিন্ধুতীরে ।
অতলের
পানে
চাহি
নয়নে
নিমেষ
নাহি
নীরবে
দাঁড়ায়ে ছিল
স্থির
নতশিরে
।
বহুকাল
স্তব্ধ
থাকি
শুনেছিল মুদে
আঁখি
এই
মহাসমুদ্রের গীতি
চিরন্তন ;
তার
পরে
কৌতূহলে ঝাঁপায়ে অগাধ
জলে
করেছিল
এ
অনন্ত
রহস্য
মনথন
।
বহুকাল
দুঃখ
সেবি
নিরখিল
, লক্ষ্মীদেবী
উদিলা
জগৎ-মাঝে অতুল সুন্দর
।
সেই
সমুদ্রের তীরে
শীর্ণ
দেহে
জীর্ণ
চীরে
খ্যাপা
খুঁজে
খুঁজে
ফিরে
পরশপাথর ।
এতদিনে
বুঝি
তার
ঘুচে
গেছে
আশ
।
খুঁজে
খুঁজে
ফিরে
তবু
বিশ্রাম না
জানে
কভু
,
আশা
গেছে
, যায়
নাই
খোঁজার
অভ্যাস
।
বিরহী
বিহঙ্গ
ডাকে
সারা
নিশি
তরুশাখে ,
যারে
ডাকে
তার
দেখা
পায়
না
অভাগা
।
তবু
ডাকে
সারাদিন আশাহীন
শ্রান্তিহীন ,
একমাত্র কাজ
তার
ডেকে
ডেকে
জাগা
।
আর-সব কাজ ভুলি
আকাশে
তরঙ্গ
তুলি
সমুদ্র
না
জানি
কারে
চাহে
অবিরত
।
যত
করে
হায়
হায়
কোনোকালে নাহি
পায়
,
তবু
শূন্যে
তোলে
বাহু
, ওই
তার
ব্রত
।
কারে
চাহি
ব্যোমতলে গ্রহতারা লয়ে
চলে
,
অনন্ত
সাধনা
করে
বিশ্বচরাচর ।
সেইমতো সিন্ধুতটে ধূলিমাথা দীর্ঘজটে
সেইমতো সিন্ধুতটে ধূলিমাথা দীর্ঘজটে
খ্যাপা
খুঁজে
খুঁজে
ফিরে
পরশপাথর ।
একদা
শুধাল
তারে
গ্রামবাসী ছেলে
,
‘ সন্ন্যাসীঠাকুর , এ
কী
, কাঁকালে ও
কী
ও
দেখি
,
সোনার
শিকল
তুমি
কোথা
হতে
পেলে
। ‘
সন্ন্যাসী চমকি
ওঠে
শিকল
সোনার
বটে
,
লোহা
সে
হয়েছে
সোনা
জানে
না
কখন
।
একি
কাণ্ড
চমৎকার
, তুলে
দেখে
বার
বার
,
আঁখি
কচালিয়া দেখে
এ
নহে
স্বপন
।
কপালে
হানিয়া
কর
বসে
পড়ে
ভূমি-
‘ পর
,
নিজেরে
করিতে
চাহে
নির্দয়
লাঞ্ছনা ;
পাগলের
মতো
চায়
— কোথা
গেল
, হায়
হায়
,
ধরা
দিয়ে
পলাইল
সফল
বাঞ্ছনা ।
কেবল
অভ্যাসমত নুড়ি
কুড়াইত
কত
,
ঠন্
ক
‘ রে
ঠেকাইত
শিকলের
‘ পর
,
চেয়ে
দেখিত
না
, নুড়ি
দূরে
ফেলে
দিত
ছুঁড়ি
,
কখন
ফেলেছে
ছুঁড়ে
পরশপাথর ।
তখন
যেতেছে
অস্তে
মলিন
তপন
।
আকাশ
সোনার
বর্ণ
সমুদ্র
গলিত
স্বর্ণ
,
পশ্চিমদিগ্বধূ দেখে
সোনার
স্বপন
।
সন্ন্যাসী আবার
ধীরে
পূর্বপথে যায়
ফিরে
খুঁজিতে নূতন
ক
‘ রে
হারানো
রতন
।
সে
শকতি
নাহি
আর
নুয়ে
পড়ে
দেহভার
অন্তর
লুটায়
ছিন্ন
তরুর
মতন
।
পুরাতন
দীর্ঘ
পথ
পড়ে
আছে
মৃতবৎ
হেথা
হতে
কত
দূর
নাহি
তার
শেষ
।
দিক
হতে
দিগন্তরে মরুবালি ধূ
ধূ
করে
,
আসন্ন
রজনী-ছায়ে ম্লান সর্বদেশ ।
অর্ধেক
জীবন
খুঁজি
কোন্
ক্ষণে
চক্ষু
বুজি
স্পর্শ
লভেছিল
যার
এক
পলভর
,
বাকি
অর্ধ
ভগ্ন
প্রাণ
আবার
করিছে
দান
ফিরিয়া
খুঁজিতে সেই
পরশপাথর ।
No comments:
Post a Comment